চুলের প্রসাধনীর মধ্যে শ্যাম্পু অন্যতম। চুলে শ্যাম্পু করার পর চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার মূলত চুল পরিষ্কার করার দ্বিতীয় ধাপ। শ্যাম্পু মূলত আপনার চুলের ময়লা, ঘাম, মাথার স্কিনের মৃত কোষ দূর করতে ব্যবহার করা হয়। অপরদিকে কন্ডিশনার ব্যবহারের ফলে এটি চুলেক নরম করে ও জটলা বাধা থেকে রক্ষা করে।
কন্ডিশনার ব্যবহার করার আগে আপনার চুলের ধরন এবং মাথার স্কিনের ধরন জানা গুরুত্বপূর্ণ। কন্ডিশনারে ফ্যাটি অ্যালকোহল, হিউমেকটেন্টস এবং তেল থাকে। কিছু কিছু কন্ডিশনারে প্রোটিন আবার কিছু কিছু কন্ডিশনারে চুল ঘন করার উপাদান থাকে।
সম্মানিত ভিজিটর, আপনি যত দামি কিংবা বিখ্যাত ব্র্যান্ডের কন্ডিশনার ব্যবহার করেন না কেন আপনি যদি সঠিক নিয়মে সেট ব্যবহার না করেন তবে উপকারের বদলে চুলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
প্রিয় ভিজিটর, আজকের লেখাজুড়ে আমি আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো চুলে সঠিক ভাবে কন্ডিশনার ব্যবহার করার নিয়ম, কোন ধরনের চুলের জন্য কোন কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত এবং ছেলে ও মেয়েদের চুলে এর ব্যবহার সম্পর্কিত আরও কিছু বিষয় নিয়ে।
Table of Contents
- কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম
- কোন চুলের জন্য কোন ধরনের কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন
- কাদের কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত
- পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- বিশেষ টিপস
- সর্বশেষ
কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম
চুলে সঠিক ভাবে কন্ডিশনার ব্যবহারের জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরন করুন-
১. আপনার চুল শাওয়ারে শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন।
২. হাতের তালুতে পরিমাণ মতো Conditioner নিন।
৩. চুলগুলো সামনের দিকে নিয়ে দুই হাতের তালু ও আঙুল দিয়ে চুলের আগার দিকে এপ্লাই করুন।
৪. খেয়াল রাখবেন মাথার স্কিনে কিংবা মুখ-চোখে যেন না লাগে।
৫. ১ মিনিট রেখে নরমাল পানি দিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। (অথবা প্যাকেট/বোতলের গায়ে নির্দেশনা দেখুন)
কোন চুলের জন্য কোন ধরনের কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন
চুলের ধরন অনুসারে আলাদা আলাদা শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার রয়েছে। তাই আপনার চুলের ধরন অনুসারে এটি ব্যবহার করা উচিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন ধরনের চুলের জন্য কোন ধরনের কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন-
১. কালার চুল
আপনি যদি চুলে কালার করেন কিংবা পারমিড হয়ে থাকে তবে কালার চুলের জন্য তৈরি করা পন্য কিনুন ও ব্যবহার করুন। অনলাইনে কিংবা সেলুন/পার্লারে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।
২. কোঁকড়া চুল
কোঁকড়া চুল বেশি ও হালকা শুষ্ক হয়ে থাকে। কোঁকড়া চুলের জন্য বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। এই ধরনের চুলের কন্ডিশনার ব্যবহার করার সময় চওড়া দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন। চিরুনি দিয়ে চুল আলাদা করে তারপর এপ্লাই করুন।
৩. টেক্সচার্ড চুল
আপনার চুল যদি অনেক বেশি ঘন হয়ে থাকে তবে আপনার একটি হার্ড Conditioner ব্যবহার করা উচিত। টেক্সচার্ড চুলের জন্য আলাদা Conditioner পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার করুন। ১ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। আরও পড়ুন চুল সিল্কি করার উপায়।
কাদের কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত
ছেলে মেয়ে সবার চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত। আপনার মাথা প্রাকৃতিক ভাবে সেবাম নামের কন্ডিশনার তৈরি করে এবং শ্যাম্পু এটি সরিয়ে দেয়। তাই শ্যাম্পু করার পর চুলে এটি ব্যবহার করা উচিত। সপ্তাহে ২-৩ বার শ্যাম্পু করার পড়ে Conditioner ব্যবহার করুন।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কন্ডিশনার ব্যবহারের তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। যেহেতু প্রসাধনী সেহেতু এগুলো তৈরি করতে নানা কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যা স্কিনের লাগলে জ্বালাপোড়া করতে পারে। তাই ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখেবন যেন মাথার স্কিন কিংবা চোখে না লাগে।
বিশেষ টিপস
তবে কোন প্রসাধনী ব্যবহারের পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিংবা কোন জ্বালাপোড়া দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন বা তাদের শরণাপন্ন হোন। বাজার নকল পন্যে ছেয়ে গেছে। আসল নকলের পার্থক্য বুজতে পারা বেশ কঠিন। কিন্তু আমাদের মাথার স্কিন খুবই সংবেশনশীল তাই অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ডের পন্য কেনা ও ব্যবহার করুন। পাশাপাশি মেয়াদ দেখে পন্য কিনুন ও ব্যবহার করুন। বাচ্চাদের থেকে আড়ালে নিরাপদ স্থানে রাখুন।
চুলে রোদ ও ধুলা-ময়লা আপনার চুলের স্বাস্থ্য ও আপনার চুলের সৌন্দর্য নষ্ট করে। তাই বাহিরে বের হলে ছাতা কিংবা হিজাব ব্যবহার করুন। পাশাপাশি অতিরিক্ত টাইট হেয়ার ব্যান্ড ব্যবহার থেকেও বিরত থাকুন।
সর্বশেষ
আজকের মতো এখানে শেষ করছি। আশা করছি আমাদের লেখাটি আপনাদের উপকারে আসবে। আপনার কোন মতামত কিংবা পরামর্শ থাকলে শেয়ার করতে পারেন আমাদের সাথে। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন, নিরাপদের থাকুন।
আরও পড়ুন- কোঁকড়া চুলের যত্ন