https://tipswali.com/wp-content/uploads/2021/10/Places-of-interest-in-Gazipur.jpg

গাজীপুর ঢাকা বিভাগের অন্যতম একটি জেলা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সিটি কর্পোরেশন গাজীপুর ইতিহাস-ঐতিহ্য, নানা প্রাকৃতিক ও প্রত্নসম্পদে ভরপুর। এই জেলায় বেশ কয়েকটি পুরাতন স্থাপনা, জমিদার বাড়ি, রিসোর্ট, কটেজ, পার্ক রয়েছে। গাজীপুরের দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে ভাওয়াল রাজবাড়ী, বলিয়াদী জমিদার বাড়ি, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, বিখ্যাত নুহাশ পল্লী, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক উল্লেখযোগ্য।

সম্মানিত ভিজিটর, আজকের লেখাজুড়ে আমি আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে যাচ্ছি ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা গাজীপুরের চমৎকার কয়েকটি দর্শনীয় স্থান ও রিসোর্টের সাথে। আরও ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করবো গাজীপুরের এই সকল দর্শনীয় স্থানসমূহে কিভাবে যাবেন কতো টাকা খরচা হবে এই সম্পর্কে।

১. নুহাশ পল্লী

গাজীপুরের দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে নুহাশ পল্লী অন্যতম। বাংলা কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের পুত্রর নামঅনুসারে ১৯৮৭ সালে হুমায়ূন আহমেদ এটি তৈরি করেন। শুরুতে ২২ বিঘা জমি ছিল তবে বর্তমানে এর আয়তন ৪৪ বিঘা। বিখ্যাত এই কথা সাহিত্যিক তার এই এই বাড়িতে নাটক সিনেমা তৈরির পাশাপাশি জীবনের অনেক সময় এখানে অতিবাহিত করেছেন।

এইখানে প্রবেশের সাথে সাথেই সবুজ প্রান্তর এর বাম পাশে লিচু বাগান দেখতে পাবেন। এর এখানেই শায়িত আছেন হুমায়ূন আহমেদ। প্রবেশ পথের সামনের দিকে এগিয়ে গেলে স্থপতি আসাদুজ্জামান খানের মা ও শিশু নামক একটি ভাস্কর্য দেখতে পাবেন। রয়েছে ভূত ও ব্যাঙের ভাস্কর্য। আর এর ঠিক পাশেই রয়েছে সুইমিংপুল।

সুইমিং পুলের একটু সামনে হুমায়ূন আহমেদের দাবা খেলার ঘর, কটেজ ও নামাজের স্থান। এর একটু পরেই রয়েছে বৃষ্টিবিলাস কটেজ। এখানে বসে হুমায়ূন আহমেদ বৃষ্টি ও রাতে পূর্ণিমার চাঁদ দেখতেন। এছাড়াও এখানে দেখতে পাবেন নানা প্রজাতির গাছ, কাদামাটি দিয়ে তৈরি করা শুটিং স্পট, ডাইনোসারের মূর্তি, মৎস্য কন্যা ও রাক্ষসের মূর্তি। নুহাশ পল্লীর উত্তর দিকে লীলাবতী দীঘি এই দীঘির পাড়ে ভূতবিলাস নামে একটি ভবন রয়েছে।

২. বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক অন্যতম। ৩,৬৯০ একর জায়গাজুড়ে তৈরি হওয়া বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক গাজীপুরের শ্রীপুর থানার মাওনা ইউনিয়নে অবস্থিত। থাইল্যান্ডের বিখ্যাত সাফারী ওয়ার্ল্ড এর আদলে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক তৈরি করা হয়েছে।

গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ৫ ভাগে বিভক্ত। এগুলো হচ্ছে- কোর সাফারি পার্ক, বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, বায়োডাইভার্সিটি, সাফারি কিংডম, এক্সটেনসিভ এশিয়ান পার্ক। প্রত্যেকটি স্পটে প্রবেশ করতে আলাদা আলাদা টিকেট প্রয়োজন হয়।

গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের মূল আকর্ষণ কোর সাফারি, এখানে সকল প্রাণী উন্মুক্ত থাকে আর পর্যটকদের বিশেষভাবে তৈরি গাড়িতে ঘুরিয়ে পার্কে থাকা বিভিন্ন প্রাণী যেমন- বাঘ, জিরাফ, সিংহ, জেব্রা, বন্য হরিন, রাজ ধনেশ, ইগল, লামচিতা, ভালুক এবং অন্যান্য প্রাণী দেখানো হয়। এখানে বনগরু সহ ৫২ প্রজাতির প্রায় ৩৪১ টি প্রাণী আছে। অন্যান্য স্পটগুলোতে শকুন, প্রাকৃতিক মাছের মেরিন একুরিয়াম, বিশ্রামাগার সহ নানা চমৎকার চমৎকার পাখির সংগ্রহ।

৩. বলিয়াদী জমিদার বাড়ি

গাজীপুরের অন্যতম আরেকটি আকর্ষণ ও দর্শনীয় স্থান বলিয়াটি জমিদার বাড়ি। প্রাচীন এই স্থাপনা দেখতে দেশের নানা প্রান্ত হতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বেড়াতে আসেন।

৪০০ বছরের পুরাতন এই জমিদার বাড়ি গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈ থানার বলিয়াদি ইউনিয়নে অবস্থিত। তবে এই জমিদার বাড়ি বাংলাদেশ সরকারের প্রাত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের সম্পত্তি নয়। জমিদারের বংশধররাই বর্তমানে এই বাড়ির মালিক। পরিবার পরিবার নিয়ে গল্প ও বেড়াতে যাওয়ার জন্য একটি আদর্শ জায়গা। জমিদার বাড়ির সীমানায় ঢোকার মুখে একটি পুকুর ও বাম পাশে একটি খেলার মাঠ রয়েছে। আর এই মাঠের একটু সামনে হাতের বাম পাশে বলিয়াদি ওয়াকফ এস্টেট জামে মসজিদ।

ইতিহাস অনুসারে এই মসজিদ নির্মাণ করা হয় ১৬১২ সালে। মসজিদের সামনে পারিবারিক কবরস্থান ও মূল ভবনের মাঝে রয়েছে বলিয়াদি এস্টেট এর সদর দফতর। আর এখান থেকেই মূলত এই এস্টেট এর সকল প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করা হতো। প্রাকৃতিক পরিবেশে যারা সময় কাটাতে চান নিরিবিলি পরিবার কিংবা বন্ধুরা বসে আড্ডা দিতে চান তাদের জন্য ঢাকার আশেপাশে গাজীপুরের এই জমিদার বাড়ি হতে পারে অন্যতম একটি জায়গা।

৪. জলেশ্বরী রিসোর্ট

পরিবার পরিজন কিংবা বন্ধুদের নিয়ে ঢাকার আশের পাশে কোথাও বেড়াতে যেতে চাইলে গাজিপুরে জলেশ্বরী রিসোর্ট যাওয়া যেতে পারে। প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে এটি অবস্থিত। রিসোর্টটিতে তিনটি ভবন, সুইমিংপুল, রেস্টুরেন্ট ও বিশাল খেলার মাঠ রয়েছে। পাশেই রয়েছে পুকুর। এছাড়াও এখানে ইনডোর ও আউটডোর গেমস এর ব্যবস্থা রয়েছে। গাজীপুরের এই রিসোর্টে কাপল, ফ্যামিলি, স্টুডেন্টস ও গ্রুপ প্যাকেজ রয়েছে। ডে লং ও নাইট স্টে প্যাকেজ রয়েছে। প্যাকেজ ভেদে সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার, সুইমিং পুল, কার পার্কিং ও নৌকায় চড়ার সুবিধা রয়েছে।

৫. বেলাই বিল

নিরিবিলে বিলে নৌকায় চড়তে পছন্দ করেন? তাহলে আপনার জন্য গাজীপুরের এই বেলাই বিল। গাজীপুর জেলার চেলাই নদীর কাছেই বাড়িয়া, বক্তারঅউর, বামচিনি ও ব্রাহ্মণগাঁও মৌজা গ্রাম ঘেরা প্রানজুড়ানো এই বিল। এই বিলের আয়তন প্রায় ৮ বর্গ মাইল। তবে বিলে সারা বছরই পানি থাকে। বলা হয়ে থাকে এক সময়ে এখানেও স্রোত বইত। এখানে বিলের পাশে নৌকা পাবেন ঘণ্টা বা দিন হিসেবে দামাদামি করে নৌকায় চড়তে পারেন। এর পাশেই রয়েছে ভাওয়াল পরগণা নামে শ্মশান বাড়ি এখানেও যেতে পারেন। মূলত যারা প্রকৃতি ও নৌকায় চড়তে ও প্রকৃতি দেখতে ভালোবাসেন তারা এখানে আসতে পারেন।

৬. ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান

একদিনের জন্য প্রকৃতির সাথে হারিয়ে যেতে চাইলে আপনি চলে যেতে পারেন গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান গাজীপুরের দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। বাংলাদেশের রাজধানি ঢাকা থেকে মাত্র ৪০কিমি দূরে গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের দূরত্ব। ৫০২২ হেক্টর জমির উপরে অবস্থিত এই জাতীয় উদ্যানে প্রায় ২২১ প্রজাতির গাছ, লতাগুল্ম, নানা প্রজাতির ঘাস, সরীসৃপ, পাখি, পাম, ও ১০৪ প্রজাতির ওষুধি গাছ রয়েছে। উদ্যানের ভিতরে রিয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা। এছাড়া উদ্যানের ভিতরে ৩১ টি পিকনিক স্পট রয়েছে। ১৯ কটেজ , রেস্ট হাউজ, প্রজাপতি বাগান, শিশু পার্ক ও কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র। আপনি চাইলে লেকের পানিরে নৌকায় চড়তে পারেন। প্রবেশ টিকেট মূল্যও বেশ কম।

৭. ভাওয়াল রাজবাড়ি

গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরে ৫ একর জমির উপর প্রায় ৪,৪৬,০০ টাকায় গড়ে উঠে এই ঐতিহাসিক দোতালা ভাওয়াল রাজবাড়ী। এখানে প্রায় তৎকালীন সময়ে ৫ লাখ প্রজার বসবাস ছিল। এই রাজবারিতে রয়েছে বড় দালান, পুরান বাড়ি, রাজ বিলাস, নাট মন্দির, পদ্ম নাভ, হাওয়া মহলের মতো বিভিন্ন ঐতিহাসিক ভবন। এই রাজবাড়ীতে প্রায় ৩৬৫ টি কক্ষ রয়েছে। এবং পচ্চিম দিকে বিশাল দিগি ও সামনে বিশাল সমতল মাঠ অবস্তিত। ভাওয়াল রাজবাড়ীর কিছু ঐতিহাসিক বংশদর রয়েছে তারা হল বলরাম রায়, রামচন্দ্র রায়চৌধুরি, দেবনারায়ন রায়চৌধুরি, সতেন্দ্র কুমার চৌধুরি, অমরেন্দ্র কুমার চৌধুরি ইত্যাদি। ঐতিহাসিক ভাওয়াল রাজবাড়ী ঢাকা থেকে যেয়ে ঘুরে আবার সন্ধার মধ্যে ঢাকায় ফিরে আসতে পারবেন। আবার আপনি চাইলে সেখানে রিসোর্টে থেকে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।

৮. একডালা দুর্গ

একডালা দুর্গ মূলত গাজীপুরের কাপাসিয়ে উপজেলায় অবস্তিত। ১৯৩২সালে ইলিয়াস শাহ দিল্লীর সুলতান ফিরোজ তুঘলকের আক্রামন থেকে বাচার জন্য ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ২ কিলোমিটার প্রস্থ এই দুর্গটি নির্মাণ করা হয়। ফিরোজ তুঘলক দুইবার আক্রামন করেও এই দখল করতে পারেনি। রায়েদ ইউনিয়নে কালী বানার নদীর তীরে দরদরিয়া দুর্গ নামে একডালা দুর্গের শাখা রয়েছে। একডালা দুর্গে যেতে চাইলে ঢাকার যে কোন জায়গা থেকে গজিপুর চৌরাস্তা যেয়ে সেখান থেকে রিকশা বা সিএনজি’তে করে একডালা দুর্গ যেতে পারবেন।

৯. শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ি

গাজীপুর জেলার ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম সুন্দর দর্শনীয় স্থান হল শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ি। শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ি আত্মপ্রকাশ ঘটে রহিম নেওয়াজ খান চৌধুরীর মাধ্যমে। শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ি মুলত দুটি অংশে বিভক্ত একটি হল বড় তরফ, অন্যটি হল ছোট তরফ। তবে বড় তরফে ঢুকতে হলে অনুমতির প্রয়োজন পড়ে কারন এখানে বর্তমান শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ির উত্তরাধিকারীগণ বসবাস করেন। ঢাকা হয়ে এখানে গেলে প্রথমে শ্রীফলতলী মোড়ে গিয়ে নামতে হবে এবং সেখান থেকে ৪-৫ মিনিট হাঁটলে শ্রীফলতলী জমিদার বাড়ি পৌঁছে যাবেন।

১০. সেইন্ট নিকোলাস চার্চ

সেইন্ট নিকোলাস চার্চ গাজীপুরের অন্যতম একটি আকর্ষণীয় স্থান। এটি মূলত গাজীপুরের কালিগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নে অবস্থিত। ১৯৬৩ সালে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে খ্রিস্টান মিশনারিদের চার্চ হিসাবে গড়ে উঠে বর্তমান সেইন্ট নিকোলাস চার্চ। এই চার্চটি নির্মাণ করা হয়েছে ১২ টি খুঁটির উপরে। এই চার্চে ৪ টি প্রবেশপথ রয়েছে। যেখানে প্রধান প্রবেশ পথের সামনে যিশু খ্রিষ্টের মূর্তি রয়েছে। সেইন্ট নিকোলাস চার্চে প্রবেশ করলে দেখা মিলবে সমবেত উপাসনার প্রার্থনা ঘর, একক উপাসনা কক্ষ, বৃহৎ আকৃতির হল ঘরের স্থাপত্যশৈলী, তিনটি সেমি-সার্কুলার প্রবেশ পথ।

১১. আরশি নগর হলিডে রিসোর্ট

গাজীপুরের দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে আরশি নগর হলিডে রিসোর্ট অন্যতম। সবুজ গাছ পালায় ঘেরা এই রিসোর্টে রয়েছে সুইমিং পুল, পিকনিক স্পট, ফিশিং, ক্যাম্প ফায়ার, খেলার মাঠ। এখানে আপনি চাইলে কনসার্ট, ডিজে পার্টি কিংবা কনফারেন্সের আয়োজন করতে পারেন। মূলত যারা পরিবার কিংবা বন্ধু-বান্ধবকে নিয়ে একান্ত সময় কাটাতে চান তাদের জন্য গাজীপুরের এই রিসোর্ট ভালো একটি জায়গা হতে পারে। এখানে নানা প্যাকেজে- কাপল প্যাকেজ, ফ্যামিলি ও গ্রুপ প্যাকেজে ডে লং কিংবা নাইট স্টে করতে পারেন। প্যাকেজ ভেদে সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার, বিকালের স্নাক্স ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা আছে।

১২. ড্রিম স্কয়ার রিসোর্ট

প্রায় ১২০ বিঘা জমির উপরে গাজীপুরের মাওনার চকপাড়াতে চমৎকার এই রিসোর্টটি অবস্থিত। রিসোর্টে নানা প্রাণীর ভাস্কর্য, ইনডোর গেমস, আউটডোর গেমস, মিনি পার্ক, বিভিন্ন রাইড, সুইমিং পুল, ফিটনেস সেন্টার, কফি শপ, রেস্টুরেন্ট, বারবিকিউ, ও গেস্ট হাউজ রয়েছে। বিশেষ করে শীতকালে এখানে বেড়াতে গেলে নানা ধরনের অতিথি পাখি দেখতে পাওয়া যায়। এখানে কেবিনের সুবিধা আছে। এখানে তিন ধরনের প্যাকেজ রয়েছে। সাথে সুইমিং পুল, খাবার, বাঁচাদের প্লে গ্রাউন্ড, দুপুরের বুফে, বিকালের স্নাক্স সহ নানা সুবিধা রয়েছে। তবে প্যাকেজ ভেদে আলাদা আলাদা। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে নানা অফার থাক।

আরও পড়ুনঃ কক্সবাজার ভ্রমণ গাইড, টাঙ্গাইল মহেরা জমিদার বাড়ি ভ্রমণ গাইড।