https://tipswali.com/wp-content/uploads/2021/04/Sanitary-Napkin.jpg

সময়ের সাথে সাথে কিশোরী থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা সবাইই আজকাল অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। তবে ডেইলি স্টারের মতে এক গবেষণায় দেখা গেছে আমাদের দেশে প্রায় ৮০% নারী পিরিয়ডের সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে পারে না। এর প্রধান কারন হিসেবে প্যাডের দাম। এছাড়াও অনেকে আবার দোকান কিংবা ফার্মেসিতে গিয়ে প্যাড কিনতে লজ্জাবোধ করে। পাশাপাশি আমাদের সমাজে বিশেষ করে আগের জেনারেশনের মহিলারা এখনও প্যাডের পরিবর্তে কাপড় ব্যবহারের পরামর্শ দেয়।

প্রিয় ভিজিটর, বাংলাদেশের বাজারে অনেক ব্র্যান্ডের Sanitary Napkin বা প্যাড কিনতে পাওয়া যায়। আজকের লেখা জুড়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি ও নিয়ম, বাংলাদেশের বাজারে থেকে ভালো মানের স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড। ট্যাম্পনস নাকি প্যাড কোনটি পড়া উচিত।

স্যানিটারি ন্যাপকিন কি?

Sanitary Napkin বা স্যানিটারি ন্যাপকিন হচ্ছে মাসিক বা ঋতুমতী অবস্থায় মেয়েদের ব্যবহৃত বিশোষক বস্তু। এছাড়াও গর্ভপাত কিংবা অস্ত্রপাচারের কারনে মেয়েদের বিশেষ অঙ্গ থেকে রক্তস্রাব থামানোর কিংবা শোষণের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এগুলো প্যাড, বা রাজঃপট নামেও পরিচিত।

স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম

বাংলাদেশের বাজারে একটি প্যাডের গড় মুল্য ১২ টাকা (প্রায়)। ৮ পিস প্যাডের একটি প্যাকেটের গড় মুল্য ৯৫ টাকা। তবে ব্র্যান্ডভেদে প্যাডের দামের পার্থক্য রয়েছে। ৮ পিসের স্যানিটারি প্যাড বা ন্যাপকিনগুলোর এক একটি প্যাকেটের দাম নিচে দেওয়া হলোঃ

সেনোরা (৮ পিস) ন্যাপকিনের দাম ৳১২০। ফ্রিডম ন্যাপকিনের দাম ৳১১০। জয়া স্যানিটারি ন্যাপকিনের (১৬ টি) দাম ৳২০০। মোনালিসা ১০ পিসের প্যাকেট  এর দাম ৳১১০, হুইসপার (১৫ পিস) ৳২৫০, ভেনাস ৫ পিস প্যাকেটের দাম ৳৫৫, সফটি ১৫ পিসের প্যাকেট প্যাডের মুল্য ৳২৬৫।

কোন স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড সবচেয়ে ভালো

বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে অনেক দেশী বিদেশি ব্র্যান্ডের পাশাপাশি ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের তৈরি করা প্যাডও কিনতে পাওয়া যায়। প্যাড তৈরিতে বেশি আরি যন্ত্রপাতির প্রয়োজন না হওয়ায় অনেকেই বর্তমানে এটি তৈরি করে থাকেন।

ভালো মানের স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাডের জন্য স্কয়ার, এসিআই, বসুন্ধরা, এসএমসি বেশ এগিয়ে রয়েছে। পাশাপাশি অনেক ছোট ছোট কোম্পানিও Sanitary প্যাড উৎপাদনের বেশ সফলতা লাভ করছে। বাংলাদশের ভালো মানের স্যানিটারি প্যাড বা ন্যাপকিন ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে জয়া, সেনোরা, ফ্রিডম, মোনালিসা, হুইসপার, ভেনাস, সফটি উল্লেখযোগ্য।

স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি

সঠিক ভাবে প্যাড ব্যবহার না করলে হিতের বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তাই সঠিক পদ্ধতিতে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবাহার জানা ও অন্যকে জানানো উচিত।

বিভিন্ন আকারের স্যানিটারি প্যাড রয়েছে। আপনার সুবিধামতো সাইজ কিনুন। সাধারনত প্যাডের সাথে একটি আঠালো বা স্টিকি স্ট্রিপ থাকে এটি উঠিয়ে আপনার অন্তর্বাসের সাথে আটকে নিন। 

প্যাড ব্যবহারে সবচেয়ে যে বিষয়ের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় সেটি হচ্ছে সময়কাল অর্থাৎ এটি আপনি কতো সময় ধরে ব্যবহার করছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে একটি প্যাড চার থেকে সর্বোচ্চ ছয় ঘণ্টা ব্যবহার করা যায়। এর বেশি সময় ব্যবহার করলে প্রথম দিকের শুকিয়ে যাওয়া রক্ত থেকে জিবানু উৎপন্ন হয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

অতিরিক্ত রক্তপাত হলে ১ ঘণ্টা পর পর বা আপনার প্রয়োজন মতো ন্যাপকিন বদলে ফেলুন।

মোড়ক বা টয়লেট পেপারে প্যাডগুলো মুড়িয়ে ফেলে দিন। অবশ্যই টয়লেটে ফেলা থেকে বিরত থাকুন এতে করে আপনার টয়লেটের ফ্লাশ বন্ধ হয়ে পানির প্রবাহ আটকে যেতে পারে।

ট্যাম্পনস নাকি স্যানিটারি ন্যাপকিন কোনটি ভালো?

Tampons কি? ট্যাম্পনস হচ্ছে মেয়েদের পিরিয়ড কালীন ব্যবহৃত একপ্রকার বিশেষ পন্য। মূলত পিরিয়ডের সময় রক্তস্রাব থামাতে যোনিতে প্রবেশ করিয়ে রক্ত ও যোনি স্রাবগুলো শোষণের জন্য ট্যাম্পনস ব্যবহার করা হয়। অনেকেই প্যাডের বিপরিতে এটি ব্যবহার করে থাকে। তবে বিশেসজ্ঞদের মতে ট্যাম্পনস এর তুলনায় ন্যাপকিন বা প্যাড ব্যবহার করা উত্তম।

পিরিয়ড প্যান্টি

পিরিয়ড প্যান্টি হচ্ছে মেয়েদের একধরনের আন্ডারগার্মেন্টস যা মাসিক বা পিরিয়ডের সময় রক্তস্রাব শোষণের জন্য ব্যবহার করা হয়। ট্যাম্পনস ও প্যাডের পরিবর্তে অনেকেই পিরিয়ড প্যান্টি পড়ে থাকে।

স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির প্রশিক্ষণ

সম্মানিত ভিজিটর আপনি চাইলে নিজেই ছোট পরিসরে প্যাড তৈরি করে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করতে পারেন। বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর এর পাশাপাশি অনেক এনজিও সংস্থা স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। আপনি এই কাজ শিখতে চাইলে আপনার নিকটস্থ মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে যোগাযোগ করুন তারা এ বিষয়ে আপনাকে সাহায্য করবে।

প্রিয় ভিজিটর, নিজের যত্ন নিন, নিজে সচেতন থাকুন, অন্যকে সচেতন করুন। নিরাপদ থাকুন, সুস্থ থাকুন। বাংলা ভাষায় টিপস ট্রিকস পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আপানাদের প্রিয় টিপসওয়ালী ডট কম।

আরও পড়ুনঃ প্রতিদিনের সুষম খাদ্য তালিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published.