শখের বসে কিংবা ভালো লাগা থেকে মানুষ বিভিন্ন প্রাণীর পোষ মানায় ও লালন পালন করে। পরিবারের সদ্যসের মতো নিয়ম করে খাবার খাওয়ানো, গোসল, অসুস্থ হলে চিকিৎসা সব কিছুই করে থাকে শখের পোষা প্রাণীটির জন্য। বিড়ালের বিষয়টি সবার চেয়ে আলাদা। বিড়ালের সামান্য একটু যত্ন নিলে আর নিয়মিত খাবার দিলে সহজেই পোষ মেনে যায়। আর এই মিশুক ও আদুরে স্বভাবের জন্য পোষা প্রাণীর মধ্যে বিড়াল অনেকেরই পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থানে থাকে। লোকমুখে বিড়াল পোষার নানা উপকারিতার কথাও শুনতে পাওয়া যায়।
প্রিয় ভিজিটর, কেমন আছেন নিশ্চয়ই ভালো? হ্যা আমি এবং আমাদের টিমও বেশ ভালো আছি। সম্মানিত ভিজিটর আজকের লেখাজুড়ে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি পোষা বিড়ালের যত্ন নেওয়ার কিছু টিপস যা আপনার প্রিয় বিড়ালটিকে রাখবে সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান। আরও ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো বিড়ালকে কি ধরণের খাবার খাওয়াবেন, কি কি কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
Table of Contents
- নিয়মিত চিরুনি করুন ও গোসল করান
- অতিরিক্ত শুকনো খবার খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন
- পরিষ্কার পানি পান করতে দিন
- লিটার বক্স
- স্ক্রাচিং পোস্ট ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিন
- বিড়ালের দাঁত ব্রাশ করান
- ক্যাট ক্যারিয়ার বা বিড়ালের ব্যাগ
- নিউট্রিং করুন
- সর্বশেষ
নিয়মিত চিরুনি করুন ও গোসল করান
বিড়ালের শরীর লোমে আবৃত থাকে। নিত্য নতুন লোম জন্মায় এবং মরা লোমগুলো ঝরে যায়। লোম যতোই ছোট কিংবা বড় হোক না কেন নিয়মিত ব্রাশ করলে বিড়ালের শরীরের মৃত চুল অপসারণে সাহায্য করে। প্রতি ৪-৫ সপ্তাহ পর পর বিড়ালটিকে গোসল করান। এই কাজে সাবানের পরিবর্তে শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
অতিরিক্ত শুকনো খবার খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন
বিড়াল নিরামিষাশী হতে পারে না, এমনকি তা অল্প কিছু দিনের জন্য ও না। দিনের প্রধান খাবার মাংস, মাছ বা আমিষ জাতীয় খাবার হওয়া উচিত। পোষা বিড়ালের প্রতি বেশি দরদী হয়ে বা বিশেষ যত্ন নেওয়ার জন্য অনেকে বেশি শুকনো খাবার খাওয়ায়। আর বেশি শুকনো খাবার খাওয়ালে তারা বেশি কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করে। যা উপকারের বিপরীতে ক্ষতির কারন হতে পারে। অধিক শুকনো খাবার খাওয়ানোর ফলে স্থূল হয়ে উঠতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। আর কুকুরের খাবার এবং বিড়ালের খাবার আলাদা এদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
পরিষ্কার পানি পান করতে দিন
পানির অপর নাম জীবন। প্রায় প্রত্যেকটি প্রাণীর পানি পান করা প্রয়োজন হয়। অন্যান্য প্রাণীদের মতো বিড়ালেরও পানি পান প্রয়োজন। বিড়াল যেহেতু গ্লাসে বা বড় খাড়া পাত্রে পানি পান করতে পারে না। তাই বিড়ালের জন্য পানি পান করানোর বিশেষ পাত্র পাওয়া যায়। পোষা প্রাণীর সামগ্রি কিনতে পাওয়া যায় এমন দোকানে কিংবা অনলেইন এমন পাত্র কিনতে পাবেন। যে পাত্রে পানি পান করান সেটি নিয়মিত পরিষ্কার করুন এবং বিশুদ্ধ পানি পান করার জন্য দিন।
লিটার বক্স
লিটার বক্স বলতে বিড়ালের প্রসাব ও মলত্যাগের বক্সকে বোঝায়। লিটার বক্সে সাধারণত বালু, মাটি কিংবা কাগজের টুকরা ব্যবহার করা হয়। কারন বিড়াল খালি জায়গায় টয়লেট করতে যায় না আর করার পর ঢেকে ফেলার চেষ্টা করে। তবে বর্তমানে বাজারে ক্যাট লিটার বক্স কিনতে পাওয়া যায়। বাড়িতে ২ টি বিড়াল থাকলে নুন্যতম ৩ টি লিটার বক্স রাখুন। নিয়মিত লিটার বক্স ব্যবহারে উৎসাহিত করুন।
স্ক্রাচিং পোস্ট ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিন
স্ক্রাচিং পোস্ট হচ্ছে রুক্ষ উপাদানে আবৃত একটি কাঠের পোস্ট যাতে বিড়ালের বা অন্যান্য পোষা প্রাণীদের স্ক্র্যাচ করতে সুযোগ দেওয়া হয়। প্রাকৃতিক ভাবেই বিড়ালের খামচানোর অভ্যাস আছে। দিনে কোন একটি সময় সে এগুলো করবেই। আর এর কারনে আপনার আসবাব পত্রের ক্ষতি হতে পারে। একটি স্ক্রাচিং পোস্ট আপনার আসবাব পত্র রক্ষার পাশাপাশি আদরের বিড়ালটির পেশী প্রসারিত করবে। এবং নখর থেকে পুরনো স্তরগুলো অপসরন করতে সাযাহ্য করবে।
বিড়ালের দাঁত ব্রাশ করান
কি অবাক হয়ে গেলেন নাকি! যে বিড়ালের আবার দাঁত ব্রাশ কিসের। মানুষের মতো বিড়ালেরও দাঁতের ক্ষয়, মাড়ি ও মুখের রোগ হতে পারে। মূলত ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এগুলো হয়ে থাকে। এই রোগগুলো রক্তের সাথে মিশে যেতে পারে এবং অন্যান্য রোগের কারনও হতে পারে। মানুষের মতো বিড়াল নিজে নিজে দাঁত ব্রাশ করতে পারে না। আর বিড়ালও মালিককে ব্রাশ করিয়ে দিতে চায় না। এজন্য বছরে একবার হলেও পশু চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যান। তারা আপনার বিড়ালের দাঁত ব্রাশ করতে সাহায্য করবে।
ক্যাট ক্যারিয়ার বা বিড়ালের ব্যাগ
বিড়াল ও অন্যান্য পোষা প্রাণী বহন করার জন্য বিশেষ ডিজাইনের ব্যাগ কিনতে পাওয়া যায়। কোথাও ঘুরতে বা বেড়াতে গেলে সাথে প্রিয় বিড়ালটি নিয়ে যেতে চাইলে এই ধরনের ব্যাগে বহন করুন। এতে আপনার প্রিয় প্রাণীটি সুস্থ থাকবে এবং কোথাও আঘাত পাওয়ার বা দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকবে না। বিশেষ করে গাড়িতে কোথাও নিয়ে গেলে বাহিরে লাফ দেওয়া বা আপনি যদি নিজে গাড়ি ড্রাইভ করেন আপনার কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
নিউট্রিং করুন
প্রজনন রোগ পুরুষ এবং মহিলা উভয় লিঙ্গের বিড়ালকে প্রভাবিত করে। পেয়িং মহিলা বিড়ালের জরায়ু সংক্রমণ ডিম্বাশয়ের ক্যানসার এবং স্তন টিউমার প্রতিরোধ করে। যখন নিউটারিং অণ্ডকোষের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং কিছু প্রটেস্ট সমস্যা প্রতিরোধ করে। এ জন্য পশু বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন। তারা আপনাকে সাহায্য করবে।
বিড়ালের খাবার কোথায় কিনতে পাওয়া যায়?
বিভিন্ন অনলাইন শপ যেমন- দারাজ, আজকের ডিল, চালডাল ও অন্যান্য অনলাইন শপে বিড়ালের খাবার ও যত্ন নেওয়ার নানা উপকরণ কিনতে পাওয়া যায়।
সর্বশেষ
প্রিয় ভিজিটর, পোষা বিড়ালের যত্ন নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন এখানেই শেষ করছি। পোষা বিড়ালের যত্ন নিয়ে আপনার কোন টিপস বা আমাদের লেখা নিয়ে আপনার কোন মতামত, পরামর্শ থাকলে শেয়ার করুন আমাদের সাথে।
মানুষের দাঁতের যত্ন নেওয়ার টিপস।